পরিযায়ী শ্রমিকদের পাচার হওয়া রুখতে সচেতনতা শিবির জেলা আইনি সহায়তা কতৃপক্ষের

নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ দু-পয়সা বেশি রোজগারের তাগিদে ভিটে ছেড়ে চলে যান মুর্শিদাবাদের কত মানুষজন। সেই তালিকায় নাম লেখায় নাবালকও। কিন্তু ভিন রাজ্যে কাজের ঠিকানা কোথায় পায় তারা? পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে তারা সেখানে কাজের সন্ধান পায়। সেই এজেন্সি ঠিক করে দেয় কোথায় যাবে, কী কাজ করতে হবে, তারজন্য কত টাকা পাবে ইত্যাদি। বিনিময় মূল্যেই তা ঠিক হয়। রোজগারের সুরাহা হওয়ায় সেই এজেন্সির লোকের মাধ্যমে তারা পাড়ি জমায় ভিন রাজ্যে অনেক সময় ভিন দেশেও। পুলিশের দাবি, বাড়ি ছাড়ার সময় কোথায় যাচ্ছে? কী কাজ করতে যাচ্ছে, কতটাকা রোজগার করবে তা কিছুই বাড়ির লোককে জানিয়ে যায় না। কিন্তু ভিন দেশে গিয়ে বিপদে পড়লে চিন্তার পাহাড় জমে পরিবারের লোকের মাথায়। হয়রান হতে হয় সর্বত্র। এমনকি হারিয়েও যান অনেকে। যদিও আইনের লোকজনের দাবি তাঁরা পাচার হয়ে যান অন্যত্র।

এই অসুবিধা দূর করতে পই পই করে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তথ্য জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়। তবু সচেতন হন পরিযায়ী তকমা পাওয়া এ জেলার শ্রমিকরা। তাই তাঁদের সচেতন করতে  ও সুরক্ষা দিতে জেলা আইনি সহায়তা কতৃপক্ষের তরফ থেকে একটি সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল শুক্রবার। ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস মিশনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ওইদিন বহরমপুর জজকোর্টের এ.ডি.আর সেন্টারে এই শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। শিবিরে উপস্থিত ছিলেন জেলা শ্রম দপ্তরের আধিকারিক, আইনজীবী, পুলিশ আধিকারিক, সমাজ কল্যাণ দপ্তরের আধিকারিক সহ অন্যরা। সেখানে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি ছাড়াও হাজির ছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারও।

শুধু ভিন জায়গায় গিয়ে বিপদে পড়াই নয় শিবিরে উপস্থিত পুলিশ আধিকারিক বলেন, “ তারা অনেক সময় পাচারও হয়ে যান। পরিযায়ী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে কেউ যাতে হারিয়ে না যান তারজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। সব সময় পুলিশের সহযোগিতা পাবেন। ” অনলাইনেই কোথায় যাচ্ছেন না যাচ্ছেন সেই তথ্য আপলোড করতে পারবেন বলেও জানিয়েছেন মুর্শিদাবাদের ডেপুটি লেবার কমিশনার বিতান দে। দীর্ঘদিন ধরে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করছেন সমাজকর্মী মতিউর রহমান। তিনি বলেন, “ অনেকসময় বাড়ির লোককেই বলে যান না কোথায় যাচ্ছেন তিনি। অনেক সময় দেখা গিয়েছে তিন মাসের ভিসায় ভিন দেশে চলে যান, অনেক সময় আধার কার্ড, ভোটার কার্ড না হলেও পাসপোর্ট তৈরি হয়ে যায়। এই ধরনের অসচেতনতার জন্যই বিপদে পরেন পরিযায়ীরা।“ ডালসার সেক্রেটারী অদিতি ঘোষ বলেন, “ পরিযায়ী শ্রমিকদের এই ধরনের নানান সমস্যা নিয়ে সচেতন করতেই এই সভার আয়োজন করা হয়েছিল।”